জাতীয় সাপ্তাহিক ক্রাইম ডায়রি একটি অপরাধ বিষয়ক পত্রিকা।।

national weeklycrime diary

national weeklycrime diary
ক্রাইম ডায়রি(জাতীয় সাপ্তাহিক, অনলাইনদৈনিক, অনলাইন টেলিভিশন ও অপরাধ গবেষণা )

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশকে ভয়ঙ্কর সংকেত দিলেন নাসা !

 

ক্রাইম ডায়রি ডেস্ক,২৯/৮/১৫ইং,ঢাকাঃ
আগামী এক থেকে দুই শতকের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে প্রায় তিন ফুট বা এক মিটারের মতো। এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
বুধবার নাসার বিজ্ঞানীরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠের এই উচ্চতা বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। কোনোভাবেই এটা এড়ানো সম্ভব নয়।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে হুমকির মুখে রয়েছে বিশ্বের বেশ কিছু ধনী শহর, গুরুত্বপূর্ণ বন্দরও। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো এই ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে এশিয়ার একটা বড় অংশ। যার ভেতরে রয়েছে বাংলাদেশও।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্থ সায়েন্স বিভাগের পরিচালক মাইকেল ফ্রেইলস বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের এই উচ্চতা বৃদ্ধি পুরো বিশ্বের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে। বিশ্বের ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠের তিন ফুটের মধ্যে বাস করে। আর এর বেশির ভাগই এশিয়া অঞ্চলের।
যুক্তরাষ্ট্রের নিচু এলাকা ফ্লোরিডা বিলীন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সেই সাথে সিঙ্গাপুর ও টোকিওর মতো বড় শহরগুলোর বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কিছু দেশেও পুরোপুরি বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে জানান নাসার ওই বিজ্ঞানী।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থায় দশম। বাংলাপিডিয়া বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা তিন ফুট বা এক মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের প্রায় ২২ হাজার ৮৮৯ বর্গ কিলোমিটার ভূমি হারিয়ে যাবে। আর এই ভূমি দেশের মোট এলাকার ১৫ শতাংশের বেশি।
মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে গলছে গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকার বরফ। মহাসাগরগুলো উষ্ণ হয়ে উঠছে এবং আগের চেয়ে অনেক দ্রুতভাবে প্রশস্ত হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ঝুঁকি।
রেসপন্ডিং টু ক্লাইমেট চেঞ্জ ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিলীন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলোর বেশির ভাগেরই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবিলায় সামান্যতম প্রস্তুতিও নেই।
তবে ইউরোপে যে দেশগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে তারা এরই মধ্যে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তবে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আরো অনেক স্থানে এই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ, মিসর ও চীনের মতো দেশগুলোর অনেক অংশই এখন সাগরে বিলীন হয়ে গেছে।
নাসা বলছে, সামনের সময়গুলোতে বৈশ্বিক উপকূলের চেহারা পুরোপুরি বদলে যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
এনডিটিভি জানিয়েছে, কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও নাসার সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি-সংক্রান্ত দলের প্রধান স্টিভ নেরেম বলেছেন, বর্তমান বৈশ্বিক উষ্ণতা ও ভবিষ্যতে উষ্ণতা কেমন হতে পারে তার ওপর ভিত্তি করে ধারণা করা হচ্ছে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা তিন ফুটের বেশি বেড়ে যাবে। তবে সম্ভবত ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো বেশি খারাপের দিকে যাবে। সবচেয়ে বড় অনিশ্চয়তা হলো এটা ধারণা করা যে, মেরু অঞ্চলের বরফ কত দ্রুত গলবে।
২০১৩ সালে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক প্যানেল (আইপিসিসি) বরফ গলার বিষয়ে সবশেষ পূর্বাভাস দিয়েছিল।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এক গবেষণা শেষে সে সময় তারা জানিয়েছিল, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক থেকে তিন মিটার বাড়তে পারে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া সবশেষ তথ্য বলছে, এর চেয়ে বেশি উচ্চতায়ও বাড়তে পারে সমুদ্রের উচ্চতা।
১৯৯২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বেড়েছে প্রায় তিন ইঞ্চি। তবে কোথাও কোথাও এই উচ্চতা বেড়েছে নয় ইঞ্চিরও বেশি।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই বাড়তি পানি এসেছে বরফ আর হিমবাহ গলে। তাই গ্রিনল্যান্ডের বরফের দিকে বেশি নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা। এক দশক ধরে এখানে ৩০৩ গিগা টন বরফ দ্বারা আচ্ছাদিত এই অঞ্চলটি। এ ছাড়া প্রতিবছর আটলান্টিক থেকে প্রায় ১১৮ গিগা টন বরফ গলে যায়।
নাসা বলছে, বিজ্ঞানীরা যে পরিমাণ আশা করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক দ্রুতগতিতে গলছে বরফ। আগামী ২০ বছরের মধ্যে এই বরফ গলার হার আরো বাড়বে। তাই আরো বেশি প্রস্তুত থাকতে হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা বরফের খণ্ড ভেঙে পড়তে দেখেননি। তাই কখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা হঠাৎ করে বেড়ে যাবে সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে যদি বরফের খণ্ডগুলো দ্রুত নিজেদের থেকে আলাদা হয়ে যেতে শুরু করে তবে এক বা দুই শতকের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ ফুট বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন নাসার বিজ্ঞানী টম ওয়াগনার।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে পুরো পৃথিবীর তাপমাত্রাই বাড়ছে। তাই বরফ গলার হার আগের মতো থাকবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন গবেষকরা।
পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র বলছে, বিশ্বের উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বরফ গলার হার বাড়বে। এবং সেটা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

https://www.facebook.com/pages/National-weeklycrime-diary/639786429398358?ref=hl

কোন মন্তব্য নেই: