জাতীয় সাপ্তাহিক ক্রাইম ডায়রি একটি অপরাধ বিষয়ক পত্রিকা।।

national weeklycrime diary

national weeklycrime diary
ক্রাইম ডায়রি(জাতীয় সাপ্তাহিক, অনলাইনদৈনিক, অনলাইন টেলিভিশন ও অপরাধ গবেষণা )

মঙ্গলবার, ২৩ জুন, ২০১৫




                                       পড়াশোনা না করেও হাতের নাগালে শিক্ষাসনদ ঃ
                                          জাল সার্টিফিকেট ব্যবসায়ীরা আবার ও সক্রিয়
ক্রাইম ডায়রি ডেস্ক রিপোর্ট,২৩/৬/১৫ইং,৩.৫১পি এম ,ঢাকাঃ
সার্টিফিকেট ব্যবসায়ীদের এখন পোয়াবারো অবস্থা।।। যেখানে সেখানে এখন গড়ে উঠেছে এই সার্টিফিকেট ব্যবসা। কি ঢাকা শহর! কি মফস্বঃল!!! সব জায়গায় এখন সক্রিয় সার্টিফিকেট ব্যবসায়ীরা। রাজধাণীর নীলক্ষেত এলাকায় এমন ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্য।নির্দিষ্ট লোক,আর নির্দিষ্ট কোড বললেই তৈরি করে দিচ্ছে সার্টিফিকেট।। অচেনা লোক দেখলে মুখটিও খুলবে না কেউ।। ইদানিং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এরাও সার্টিফিকেট বিক্রি করছে দেদারছে ঢাকঢোল পিটিয়ে। কিছুদিন আগে গত ১৭ ই মার্চ,২০১৫ সন্ধ্যা ৮.০৫.৩৯ পি এম এ ক্রাইম ডায়রির বার্তা প্রধানের মোবাইলে মেসেজ আসে ০১৭১১১০৫৪৪২ এই নম্বর থেকে।।মেসেজটা ঠিক এই রকম--Need?Pure certificate of SSC/HSC/Degree/Masters.Any certificate of Southern/Gono University=50,000tk.SSC/HSC of Open University=20,000tk with online.-Dr.Sohel. বেশকিছুদিন পর দৈনিক দেশকালের প্রধান সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান ভাইয়ের ফোন থেকে ফোন দিলে অপর প্রান্ত থেকে সারা দেন এক সুকন্ঠি মহিলা যিনি নিজেকে পুস্পিতা বলে পরিচয় দেন এবং ড. সোহেলের সাথে কথাও বলিয়ে দেন এবং সার্টিফিকেটের জন্য গুলশান-১ এ অবস্থিত সাউদার্ন ভার্সিটির ক্যাম্পাসে যেতে বলেন। ভিন্ন পরিচয়ে ফোন দিলে একই মহিলা ফোন ধরে একই জায়গায় যেতে বলেন। ভার্সির্টির ক্যাম্পাসে পৌছলে সেখানে প্রথমে রাজী হলেও পরে কথায় সন্দেহ হওয়ায় তারা নিজেদের প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দেন।।ঠিক এমনি ভাবে দারুল ইহসান ভার্সিটির ভিসির পরিচয়ে একদল লোক খোদ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সার্টিফিকেট ব্যবসা করে যাচ্ছেন।।মফস্বলের কম্পিউটার ব্যবসায়ীরাও সার্টিফিকেট ব্যবসা করেন বলে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। শিক্ষা সনদ প্রয়োজন হয় এদেশে চাকরির ক্ষেত্রে। এখন আবার বিদেশেও যেতে সার্টিফিকেট প্রয়োজন। এই সার্টিফিকেট প্রয়োজনের সময় সোনার হরিণ। কিন্তু সার্টিফিকেট এখন আর সোনার হরিণ নয়, কারণ ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দিলেই পাওয়া যায় চাহিদা অনুযায়ী মনগড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট। নামী-দামী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং হস্তশিল্পের সার্টিফিকেটও মেলে টাকায়। এই অবৈধ সার্টিফিকেট ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কাজ হলো গ্রাহক যোগাড় করে প্রস্তুতকারক পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া। চট্টগ্রামে এমন দুটি সিন্ডিকেটের কয়েক সদস্যকে গ্রেফতারের পর জাল সার্টিফিকেট ব্যবসার টপ টু বটম তথ্য উঠে এসেছে। গ্রেফতারকৃতদের চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চলছে সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে।
অভিযোগ রয়েছে, আমাদের দেশের আইন একটু ঢিলেঢালা। ফলে অপরাধীর পক্ষে চলে যায় তদন্ত রিপোর্ট। তদন্তকারী কর্মকর্তার রিপোর্ট আইনের বাইরে নয়। ফলে আইন অনুযায়ী প্রতারণা মামলায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দেয়া ছাড়া গতি থাকে না পুলিশের। এ ছাড়াও সাক্ষীদের অভাবেই অনেকটা মামলা হাল্কা হয়ে যায়। কারণ যেখানে জাল সার্টিফিকেট তৈরি হয় সেখানে কোন ব্যবসায়ী তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে না থাকায় সাক্ষ্য দিতে নারাজ পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে, যাদের গ্রেফতার করা হয় তারা পুলিশের আইনের ধারা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখে। এমনকি পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টেই দুর্বল আইনের প্রয়োগের কারণে সহজেই এই মামলায় জামিন পাওয়া যায়। তবে জামিনের পর পরই অপরাধীরা আবারও একই পেশায় ফিরে আসে সিন্ডিকেট তৎপর থাকার কারণে।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের মুখপাত্র ও এডিসি এসএম তানভীর আরাফাত জানিয়েছেন, আমরা সিন্ডিকেটের সকল সদস্যকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। জাল সার্টিফিকেট ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তারা সাধারন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তবে যারা সার্টিফিকেট করে তারাও সমান অপরাধী। ক্রেতার কারনেই বিক্রেতারাও তৈরি করছে। এসব ক্রেতাদেরও খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিউ মার্কেট এলাকার দোস্ত বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে ফটোকপি, রঙিন ফটোকপিসহ কম্পিউটার ড্রাফটিংয়ের ব্যস্ততম পরিসর। কিন্তু এরই আড়ালে চলছে সার্টিফিকেট স্ক্যান করেই জাল সার্টিফিকেট তৈরির রমরমা ব্যবসা। এমন তথ্যের ভিত্তিতেই সেখানে অভিযান চালানো হয়। কপি বাজার নামের একটি দোকান হতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক এনামুল হকের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
সার্টিফিকেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আনোয়ারার ঝিউরি এলাকার নূর হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার জয়নগর এলাকার মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে মোঃ শাহীন ও সন্দ্বীপের বাউরিয়া এলাকার মৃত ইদ্রিস আলমের ছেলে শামসুদ্দীন সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে জাল সার্টিফিকেট ও জাল সার্টিফিকেট তৈরির কম্পিউটার সরঞ্জামাদি।
আরও জানা গেছে, গত ১৫ মে জাহাজে চাকরির বিভিন্ন জাল সনদ ও বিভিন্ন জাল কাগজপত্র সিলসহ আসামি নোয়াখালীর কবিরহাট এলাকার অমরপুর গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে দ্বীন মোহাম্মদ, চাঁদপুরের আখনবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুর রবের ছেলে মোঃ মহসিন ও সিরাজগঞ্জের কাজীপুর কুরাকান্দির মৃত আলতাফ তালুকদারের ছেলে আলম তালুকদারকে গ্রেফতার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিদর্শক সৈয়দ আহসানুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি অভিযান চালানো হয়। আগ্রাবাদের ক্লিপটন প্লাজা এলাকা হতে আসামি দ্বীন মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ১টি নেভী ব্লু রঙের ধারাবাহিক ডিসচার্জ সনদ বই উদ্ধার করা হয়।
তার তথ্য মতে জাইল্যাপাড়ার তার বাসা হতে ৯৩টি ধারাবাহিক ডিসচার্জ সার্টিফিকেট (সিডিসি) প্রকাশ নলি, ৭১টি সার্টিফিকেট অব কম্পোন্টেসি বই, ৭টি সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি সনদ, বিভিন্ন নামে ইস্যুকৃত সনদ, ১৫০টি বিভিন্ন ডিজাইনের সীলমোহর উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। অপরদিকে আসামি মোঃ মহসিনের বাসা হতে ১টি ধারাবাহিক ডিসচার্জ সার্টিফিকেট (সিডিসি) প্রকাশ নলি উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে তাদের অপর সহযোগী আলম তালুকদারকে আন্দরকিল্লা হতে গ্রেফতার করা হয়। এভাবেই চলছে জাল সার্টিফিকেট ব্যবসা। রাজধানীর নীলক্ষেতেও অহরহ পাওয়া যায় এমন সার্টিফিকেট । এছাড়া মতিঝিল অফিস পাড়া ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় একাধিক বার এমন সার্টিফিকেট ব্যবসায়ীরা ধরা পড়লেও ছাড়া পেয়ে তারা একই কাজ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।।
সম্পাদিত-------------

https://www.facebook.com/pages/National-weeklycrime-diary/639786429398358?ref=hl

কোন মন্তব্য নেই: