জাতীয় সাপ্তাহিক ক্রাইম ডায়রি একটি অপরাধ বিষয়ক পত্রিকা।।

national weeklycrime diary

national weeklycrime diary
ক্রাইম ডায়রি(জাতীয় সাপ্তাহিক, অনলাইনদৈনিক, অনলাইন টেলিভিশন ও অপরাধ গবেষণা )

বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৫

https://www.facebook.com/pages/National-weeklycrime-diary/639786429398358?ref=hl


ফলোআপ-----
রাজধানীতে বি আর টি এ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী খুন


শাহাদাত হোসেন রিটন,,ক্রাইম ডায়রি,১৫ ই এপ্রিল,২০১৫,আপডেট সময়: ৮ এ এম ঃ
রাজধানীতে ঘরের ভিতর ঢুকে খুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।।রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) এক কর্মকর্তার বাসায় ঢুকে তার স্ত্রীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত। এই ঘটনায় ওই কর্মকর্তা ও তার দুই মেয়েও গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহত কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস (৩৪) একটি কলেজের শিক্ষিকা ছিলেন। আহত হয়েছেন তার স্বামী বিআরটিএর উপপরিচালক (অপারেশন) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস (৩৬), তাদের বড় মেয়ে শ্র“তি বিশ্বাস (১৫) ও অদ্রি বিশ্বাস (৬)। আহতদের মহাখালী মেট্রোপলিটন হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। গত সোমবার রাত ১০টায় মোহাম্মাদপুর ইকবাল রোডের ৩/১২ নম্বর পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা পূর্বপরিচিত কেউ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জাকির হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ীকে সন্দেহ করা হলেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই ভবনের দুজন সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।  ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শ্র“তি বিশ্বাসের বরাত দিয়ে শীতাংশু শেখরের বোন সঞ্চিতা বিশ্বাস জানান, গত সোমবার রাত ৯টার দিকে কোচিং থেকে বাসায় ফেরে বড় মেয়ে শ্র“তি বিশ্বাস। এর কিছুক্ষণ পরই ফুল, কেক, জুস ও ফল নিয়ে এক ব্যক্তি বাসার নিচে আসেন। গেট থেকে দারোয়ান ওই ব্যক্তির বিষয়ে শীতাংশুকে জানালে তিনি তাকে উপরে আসতে বলেন। উপরে এসে ড্রয়িং রুমে বসে শীতাংশুর সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। এ সময় ওই ব্যক্তি শীতাংশুকে স্যার বলে সম্বোধন করছিলেন। ওই ব্যক্তি শীতাংশুর জš§দিন উপলক্ষে একটি কেক আনেন। কেকটি কাটার জন্য ড্রইং রুমে একটি মোমবাতিও জ্বালানো হয়। এসময় তার আনা জুস খেয়ে শীতাংশু অচেতন হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। আর তখনই ওই ব্যক্তি সাথে নিয়ে আনা হাতুড়ি দিয়ে শীতাংশুর মাথায় আঘাত করেন। ঘটনা আঁচ করতে পেরে শীতাংশুর স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস রান্নাঘর থেকে বটি নিয়ে ছুটে আসেন। তার হাত থেকে বটি কেড়ে নিয়ে ওই ব্যক্তি কৃষ্ণার মাথায় কোপ দিলে তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। সঞ্চিতা বিশ্বাস আরও জানান, বাবা-মায়ের উপর হামলার বিষয়টি টের পেয়ে পাশের রুম থেকে দুই মেয়ে ছুটে এলে তাদেরও উপর হামলা চালানো হয়। এক পর্যায়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ওই ব্যক্তি চলে যান।  পরে শীতাংশু ও তার দুই মেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের দরজায় আঘাত করেন। ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা আগুন নিভিয়ে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে শ্যামলীর কেয়ার হসপিটালে নিয়ে যান। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে কৃষ্ণা কাবেরীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে রাত ৩টায় চিকিৎসকরা কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাবা ও দুই মেয়েকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবেশী প্রকৌশলী সাবের আহমেদ বলেন, চিৎকার ও দরজায় শব্দ শুনে তিনি দরজা খুলে দেখেন সুধাংশু ও তার দুই মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তার বাসার দরজার সামনে পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি তাদের নিজের বাসার ভেতরে নিয়ে যান। এসময় এক মেয়ে তার মাকে বাঁচাতে অনুরোধ করলে অন্য প্রতিবেশীদের নিয়ে তিনি শীতাংশুর বাসায় ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন বাসার আসবাবপত্রে আগুন জ্বলছে। ধোঁয়ায় পুরো ঘর আচ্ছন্ন। পরে নিজের বাসা থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ঘরের এক পাশে দগ্ধ ও রক্তাক্ত অবস্থায় কৃষ্ণা কাবেরীকে উদ্ধার করেন। সাবের বলেন, শীতাংশু এই ঘটনার জন্য জাকির নামে একজনকে দায়ী করছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই ঘটনার জন্য জাকির দায়ী। সে পালিয়ে গেছে। আহতদের বরাত দিয়ে মোহাম্মাদপুর থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, কয়েকদিন আগে শীতাংশুর জš§দিন ছিল। সেদিন না আসতে পারায় সোমবার রাতে তার পরিচিত এক যুবক কেক, মিষ্টি ও ফুল নিয়ে তাদের বাসায় যান। কেক টেবিলে সাজিয়ে মোমবাতিও জ্বালানো হয়। এরপর হঠাৎ করেই সঙ্গে নিয়ে আনা হাতুড়ি দিয়ে শীতাংশুর মাথায় আঘাত করে ওই যুবক। ওসি আরো বলেন, হামলার মধ্যে কৃষ্ণা জ্বলন্ত মোমবাতির ওপর পড়ে যান। এতে তার কাপড়ে আগুন ধরে যায়। এরপর তিনি আগুন থেকে বাঁচতে পুরো ঘরে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এক সময় সোফায় বসার চেষ্টা করলে তাতেও আগুন ধরে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওসি বলেন, শীতাংশু ও তার দুই মেয়ে এবং পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে হাজী আহমেদ সিকিউরিটিজ নামের একটি ব্রোকার হাউজের জাকির হোসেন একাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শীতাংশু বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিকান্দি উপজেলার মহরপুর গ্রামে। ৬ ভাই, ৪ বোনের মধ্যে তিনি নবম। বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক (অপারেশন) হিসাবে কর্মরত রয়েছেন তিনি। স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস মোহাম্মাদপুরের আদাবরের মিশন ইন্টারন্যাশনাল কলেজে শিক্ষকতা করতেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়ায়। আহত শ্র“তি মোহাম্মাদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের দশম ও অদ্রি একই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। শীতাংশুর ছোট ভাই বরিশাল বিএম কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক হীমাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, ঘটনা যে বা যারাই ঘটাক এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। উল্লেখ্য যে লাশ এলাকায় নিয়ে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সৎকার করা হয়েছে। এতে এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে।


কোন মন্তব্য নেই: