আগামীতে যুদ্ধ জাহাজ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
মিল্টন ও হাবীব, বাগেরহাট সংবাদদাতা,ক্রাইম ডায়রি,৭/৯/২০১৫ইং,ঢাকাঃ
খুলনা শিপইয়ার্ড আগামীদিনে উন্নত ও আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ রপ্তানিতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, খুলনা শিপইয়ার্ড বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য বর্তমানে বড় ও ছোট যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ ও সংস্কারের পাশাপাশি সমুদ্রগামী বড় ও মাঝারি জাহাজ তৈরি করছে। আমি বিশ্বাস করি আগামীতে উন্নত ও আধুনিক যুদ্ধজাহাজ রপ্তানির সক্ষমতা অর্জনে সক্ষম হবে ইনশাল্লাহ।
গতকাল দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ডে নৌবাহিনীর জন্য দুটি বড় যুদ্ধজাহাজ লার্জ পেট্রোল ক্রাফট (এলপিসি) নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এটি হচ্ছে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী খুলনা শিপইয়ার্ড এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিপইয়ার্ডে পরিণত হবেÑ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বাংলাদেশে খুলনা শিপইয়ার্ডই প্রথমবারের মতো যুদ্ধজাহাজ লার্জ পেট্রোল ক্রাফট (এলপিসি) নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করায় আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার সূচনালগ্নেই নদী ও সমুদ্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন। যে কারণে নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করার কাজে হাত দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আজ যেখানে সমবেত হয়েছি, তার অদূরেই রূপসা নদীতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ১০ ডিসেম্বর শহীদ হয়েছিলেন বীর শ্রেষ্ঠ রূহুল আমিনসহ পদ্মা ও পলাশ জাহাজের আরও অনেক নৌ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মহান নৌ মুক্তিযোদ্ধাদের আÍার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু এখন আর স্বপ্ন নয়। ইতোমধ্যেই সেতুর ২৩ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ সেতু নির্মাণ শেষ হলে এটি দক্ষিণাঞ্চলের উন্নতির প্রবেশদ্বার হবে। বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানি করতে মংলাবন্দর ব্যবহার হবে। তিনি বলেন, আমাদের নদীবন্দর নিয়ে গবেষণা করতে হবে। এজন্য দেশে দুটি নৌ ইন্সটিটিউট গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, খুলনা সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা এমপি, মিজানুর রহমান মিজান এমপি, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে বাগেরহাটের মংলার নেভাল বার্থ দ্বিগরাজে বানৌজা কে জে আলী, বানৌজা স›দ্বীপ ও বানৌজা হাতিয়ার কমিশনিং এবং নবনির্মিত ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক (এলসিটি) ১০৩ ও ১০৫-এর সংযুক্তিকরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের পাশাপাশি দেশকে সমৃদ্ধিশালী করার জন্য নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরনে। তিনি বলেন, আমাদের নৌবাহিনী শুধু দেশে নয়, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যেকোনো স্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম হবেÑ এটাই আমাদের সবার প্রত্যাশা।
দেশের জলসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌবাহিনীকে ‘দক্ষ, আধুনিক ও ভারসাম্যপূর্ণ একটি ত্রিমাত্রিক’ বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দুটি সাবমেরিন সংযোজনের প্রক্রিয়া চ‚ড়ান্ত হয়েছে, যা ২০১৬-এর মাঝামাঝি নৌবাহিনীতে সংযোজিত হবে। নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে, আমাদের যে সীমিত সম্পদ, তা দিয়ে নৌবাহিনীর মতো একটি প্রযুক্তিনির্ভর ব্যয়বহুল বাহিনীকে যুগোপযোগী রাখার প্রয়াস অব্যাহত রাখতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন, দেশের ৭২০ কিলোমিটার উপক‚লীয় এলাকায় প্রায় তিন কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবিকা নির্বাহের জন্য সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল। বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি সমুদ্রপথেই পরিচালিত হয়। এ কারণে সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা বিধান ‘অপরিহার্য’। দেশের অধিকাংশ নাগরিক সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট ‘সচেতন নয়’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের নৌবাহিনীর সদস্যরা প্রতিনিয়ত লোকচক্ষুর অন্তরালে অনেক প্রাকৃতিক প্রতিক‚লতা মোকাবিলা করে সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করছে।
https://www.facebook.com/pages/National-weeklycrime-diary/639786429398358?ref=hl
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন