জাতীয় সাপ্তাহিক ক্রাইম ডায়রি একটি অপরাধ বিষয়ক পত্রিকা।।

national weeklycrime diary

national weeklycrime diary
ক্রাইম ডায়রি(জাতীয় সাপ্তাহিক, অনলাইনদৈনিক, অনলাইন টেলিভিশন ও অপরাধ গবেষণা )

রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

                                    রাজধানীতে তৎপর অজ্ঞান পার্টির সদস্যরাঃ
                                    প্রাইভেট কার কিংবা ট্যাক্সিতে উঠতে সাবধান

ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ
রাজধানীর এম ই এস গেইট থেকে মিরপুর যাওয়ার জন্য মাইক্রো কিংবা প্রাইভেট কার ছাড়া কোন বিকল্প নেই। এমনই একটি প্রাইভেট কারে উঠলেন েএক জন ব্যাংক কর্মকর্তা। গাড়ির ভিতর আগে থেকে বসে থাকা যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে তাকে ভিতরে উঠতে দিলেন। কারন তিনি সবার আগেই নেমে যাবেন। তারপর প্রাইভেট কার চালক কারটি ফ্লাইওভার দিয়ে ডানে টার্ন নিয়ে সোজা টান দিলেন উত্তরার দিকে। ৫০ হাজার টাকা বিকাশ করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় । তবে তিনি িএখন পঙ্গু।
কুমিল্লার শহীদ নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্র মোহাম্মদ সোহাগ। ঈদের ছুটি কাটাতে কুমিল্লা থেকে আসছিলেন ঢাকার উত্তরায় বড় ভাইয়ের বাসায়। কিন্তু দুই ভাইয়ের একসঙ্গে ঈদ করা আর হলো না। ২২ সেপ্টেম্বর অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে পথেই প্রাণ গেল সোহাগের। একদিন না যেতেই বুধবার অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মারা যান ট্রেনচালক সোলেমান খান। শুধু তাই নয়, বুধবার সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েন ১০ জন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডিএমপির হিসাব মতে, আগস্টে পঁাঁচজন ও গত মে মাসে ১৩ জন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন। অনেকে পুলিশের কাছে না যাওয়ায় বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি।সাবধান! তৎপর অজ্ঞান পার্টি
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান সমকালকে বলেন, রাস্তায় অপরিচিত লোকের দেওয়া কোনো খাবার গ্রহণ না করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক অনেক কার্যক্রম চালানো হয়। অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও অজ্ঞান পার্টির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অজ্ঞানকারীরা ফুটপাত, লঞ্চঘাট, রেল, বাস, হাট-বাজার ও জনবহুল জায়গায় হকার হিসেবে অবস্থান করে। বাসে তারা বিভিন্ন সময় ভিন্ন কৌশলে হকার সাজে। এসব স্থানে তারা ট্যাবলেট মিশ্রিত ডাবের পানি, জুস, চা, কফি, পান, খেজুর, ঝালমুড়ি, হালুয়া, চকোলেট, কোমল পানীয় বিক্রি করে। আবার কখনও যাত্রী হিসেবে লঞ্চ, বাস বা ট্রেনে উঠে সরাসরি কারও সঙ্গে সখ্য গড়ে অচেতন করার খাবার খাইয়ে দেয়। পরে মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায়। জানা যায়, খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে অজ্ঞান পার্টি চেতনানাশক এটিভেন ট্যাবলেট মেশায়। মানুষকেঘুমের জন্য চিকিৎসকরা এটিভেন সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অধিক হওয়ায় বাংলাদেশে এর আমদানি নিষিদ্ধ।
অজ্ঞান পার্টির এক সাবেক সদস্য জানান, দুই বছর তিনি একটি চক্রের সঙ্গে কাজ করেছেন। একটি মর্মান্তিক ঘটনার পর এ কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। এখন রিকশা চালান। তবে ওই চক্র তাকে ফিরে পেতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। তিনি জানান, আজিজ, জাফর, রুস্তম, মোস্তফা ও শাহিন চক্রের অজ্ঞান পার্টি এখন মাঠে সক্রিয়। অভিনব পদ্ধতিতে তারা কাজ করে। চক্রেরহোতারা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে স্থায়ীভাবে থাকে না। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকা, কল্যাণপুর, সদরঘাট, টঙ্গী, বিমানবন্দর, তেজগাঁও তাদের আস্তানা। তাদের গ্রুপে চার-পাঁচজন সদস্য থাকে। একজন চেতনানাশক ট্যাবলেট মেশানো খাবার নিয়ে কাজ করে। কৌশলের অংশ হিসেবে তারা দুই ধরনের খাবার রাখে। নিজেরা যেগুলো খেয়ে দেখায় তাতে চেতনানাশক ট্যাবলেট থাকে না। তবে টার্গেট ব্যক্তিকে দেয় চেতনানাশক ট্যাবলেট মিশ্রিত খাবার। অজ্ঞান পার্টির এই সাবেক সদস্য জানান, নগদ টাকা বা মূল্যবান সামগ্রী আছে এমন ব্যক্তিকে টার্গেট করা হয়। চক্রের এক-দু'জন টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে সখ্য গড়ে। এক পর্যায়ে ইশারা দিলে চক্রের অন্য সদস্য খাদ্যসামগ্রী বিক্রয়ের ছলে তাদের কাছে আসে। কৌশলে ওই ব্যক্তিকে প্ররোচিত করে। খাবার খেতে সম্মত হলেই সর্বনাশ! ট্যাবলেট মিশ্রিত খাবার খেয়ে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে ওই ব্যক্তি অচেতন হলে তার টাকা ও মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।

কোন মন্তব্য নেই: